তরুণীদের পছন্দের পোশাক | কোথায় পাওয়া যায় এবং দাম কেমন?
(পর্ব-২)
গত পর্বে আমরা আলোচনা করেছি তরুণীদের পছন্দের সালোয়ার-কামিজ ও ওয়েস্টার্ন পোশাক এবং সেগুলো কোথায় এবং কী দামে পাওয়া যায়। তবে ফ্যাশন সচেতন হলেও ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা তরুণী এবং শাড়িপ্রেমীদের কথা ভুলে যাইনি।
ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা তরুণীদের পোশাক
বর্তমানে ফ্যাশন সচেতন অথচ ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলা তরুণীদের মূলত গাউন ও হিজাবের প্রতি আগ্রহ বেশি। একটি সুন্দর গাউন ফ্যাশনের পাশাপাশি পর্দার চাহিদাও পূরণ করে। তরুণীরা সাধারণত একরঙা কিংবা ছাপা ডিজাইনের গাউন পছন্দ করে, এবং রঙের ক্ষেত্রে মেরুন, আকাশি, টিয়া, কালো, গোলাপি রংগুলো বেশি জনপ্রিয়। গাউন হতে পারে ফুল স্লিভ কিংবা হাফ স্লিভ, এটি নির্ভর করে যার যার পছন্দের উপর। হিজাবের ক্ষেত্রে, যারা হিজাব পরেন না তারা স্কার্ফ বা সাধারণ ওড়না পরতে পারেন—দুটোই গাউনের সাথে মানানসই।
কোথায় পাওয়া যাবে?
বসুন্ধরা, ইস্কাটন, এলিফ্যান্ট রোড এবং চাঁদনী চকে বিভিন্ন ডিজাইন ও কাপড়ের রেডিমেড গাউন পাওয়া যায়। গজ কাপড় কিনে নিজের পছন্দমত ডিজাইন করে বানিয়ে নেয়ারও সুযোগ রয়েছে। এছাড়া, অনলাইনেও বিভিন্ন ডিজাইন যাচাই-বাছাই করে গাউন এবং হিজাব কিনে ফেলা যায়।
দাম কেমন হবে?
গাউনের দাম শুরু হয় প্রায় দুই হাজার টাকা থেকে এবং তা ১০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া সম্ভব। গুলশান পিঙ্ক সিটিতে দাম বারো হাজার থেকে ত্রিশ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণ ব্যবহার উপযোগী গাউন বানাতে চাইলে খরচ পড়বে পনেরশ থেকে তিন হাজার টাকা। হিজাবের দাম পাঁচশ থেকে পনেরশ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
লং কামিজ ও ফ্রকের জনপ্রিয়তা
আজকাল লং কামিজ ও ফ্রকের চলও দেখা যাচ্ছে। লং বা শর্ট ফ্রক, লেগিংস কিংবা কুঁচি দেওয়া সালোয়ারের সাথে বেশ মানানসই হয়। লং কামিজ সাধারণত লং লেগিংসের সাথে ভালো মানায়। তরুণীরা এগুলোকে স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করছে।
কোথায় পাওয়া যাবে?
লং কামিজের জন্য দেশি দশ সবচেয়ে উপযুক্ত, এছাড়া রাপা প্লাজা, স্মার্টেক্স, বিশ্বরঙ, আড়ংতেও লং কামিজের ভালো কালেকশন রয়েছে। যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা এবং ইয়েলো-তে ভালো মানের ফ্রক পাওয়া যায়। স্মার্টেক্স, এস্টাসি ও ফ্রিল্যান্ডে উন্নতমানের স্টাইলিশ পোশাকের বৈচিত্র্যও পাওয়া যায়।
দাম কেমন হবে?
লং কামিজের দাম বারশ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে থাকে। ফ্যাশন ভেদে ফ্রকের দাম দুই হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকার মধ্যে হতে পারে। নিজে ডিজাইন করে বানিয়ে নিলে খরচ কিছুটা কম হতে পারে।
শাড়ির চল ও জনপ্রিয়তা
যুগের পরিবর্তনের পরও শাড়ির জনপ্রিয়তা কমেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফর্মাল প্রেজেন্টেশন, পুরস্কার বিতরণীসহ অনেকক্ষেত্রেই শাড়ি অন্যতম পছন্দের পোশাক। শাড়ির ডিজাইন ও রঙ অনুষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। তরুণীরা বিয়ের জন্য উজ্জ্বল রঙের কাতান, সিল্ক বা তসর শাড়ি বেছে নেয়, আবার ফরমাল জায়গায় জামদানি বা হালকা সুতি শাড়ি পছন্দ করছে।
কোথায় পাওয়া যাবে?
আড়ং, নবরূপা, কে ক্র্যাফট, মনেরেখতে পাওয়া যায় সুতি, হাতের কাজ করা জামদানি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। ভারী কাজের শাড়ি যেমন কাতান, কাঞ্জিবরম, সিল্ক, জর্জেট পাওয়া যায় বসুন্ধরা এবং মিরপুর বেনারসি পল্লিতে।
দাম কেমন হবে?
সুতি শাড়ির দাম পনেরশ থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে থাকে। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির দাম চার থেকে পনের হাজারের মধ্যে। উন্নতমানের কাতান শাড়ি সাত-আট হাজার থেকে শুরু করে পাওয়া যায়। ঢাকাই জামদানির দাম পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ পর্যন্ত হতে পারে, তবে দশ হাজারের মধ্যেও ভালো মানের পাওয়া সম্ভব।
পোশাকের গুরুত্ব ও ব্যক্তিত্ব
পোশাক এখন শুধুমাত্র প্রয়োজন নয়, এটি সামাজিকতা, শৌখিনতা এবং ফ্যাশন সচেতনতারও প্রতীক। পোশাক নির্বাচনের ওপর নির্ভর করে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব, রুচি এবং স্বকীয়তা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তরুণীদের পোশাক ও ফ্যাশন সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তবে, ফ্যাশনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজের স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই পোশাকই নির্বাচন করুন, যা আপনার স্মার্টনেস, বুদ্ধিমত্তা এবং ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলবে।
0 Comments